Home » আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অভিযান-ডিআইজি মিজান পরিচয়দানকারী প্রতারক গ্রেফতার

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অভিযান-ডিআইজি মিজান পরিচয়দানকারী প্রতারক গ্রেফতার

কর্তৃক xVS2UqarHx07
554 ভিউজ

আজকের মেহেরপুর ডেক্স:

আলমডাঙ্গা থানাধীন ওসমানপুর গ্রামের দিনমজুর মুহিদুলের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল একই গ্রামের প্রতারক
উজ্জ্বলের। মুহিদুলের ভাতিজা নাফিজকে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ডিআইজি মিজানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন প্রতারক উজ্জ্বল। উজ্জ্বলের কথামতো ডিআইজি মিজানের কাছে প্রথমে বিভিন্ন ডকুমেন্টস পাঠান মুহিদুল।

এক পর্যায়ে ডিআইজি সাহেব মুহিদুলকে ফোন করে চাকরির বিষয়ে কথাবার্তা বলেন এবং পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য আট লক্ষ টাকায় দফারফা করেন। চুক্তির শর্ত মোতাবেক মুহিদুল ডিআইজি মিজানের বিকাশ নম্বরে চল্লিশ হাজার টাকা পাঠান। বাকি টাকা চাকরি কনফার্ম হওয়ার পর পরিশোধ করার কথা।

চুক্তির পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও চাকরির কোন আপডেট না পেয়ে ডিআইজি মিজানকে ফোন করেন ভুক্তভোগী মুহিদুল। যথারীতি মোবাইল ফোনটি আর ব্যবহ্রত হচ্ছে না, মর্মে জানান মোবাইল কর্তৃপক্ষ। মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন মুহিদুল। কারণ, চল্লিশ হাজার টাকার মধ্যে সবকটা টাকাই তো সুদের বিনিময়ে ধার করে নেওয়া। কথা ছিল, ভাতিজার চাকরি হয়ে গেলে সব টাকা পই পই করে শোধ করে দিবেন তিনি।

সবকিছু হারিয়ে চোখে সর্ষেফুল দেখেন মুহিদুল, দৌড়ে ছুটে যান মধ্যস্থতাকারী উজ্জলের নিকট। সব শুনে উজ্জল তাকে আশ্বস্ত করে, টাকা ফিরিয়ে আনার। সময় গড়াতে থাকলে মুহিদুল সিদ্ধান্ত নেন মামলা করার। এতে বাঁধ সাধেন প্রতারক উজ্জ্বল। কৌশলে
তাকে দিয়ে ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ মহোদয় বরাবর একটি আবেদন লিখেন হোয়াটসঅ্যাপে আর এই আবেদনও লিখে দেন প্রতারক উজ্জ্বল।

উজ্জ্বলের পরামর্শে মুহিদুল তার আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত পেতে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করলে, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ মহোদয়, এসপি চুয়াডাঙ্গা মহোদয় হয়ে তা আমার কাছে আসে। আমি ভিকটিম মুহিদুলকে ডেকে বিস্তারিত শুনে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তায়
প্রথমে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানা হতে প্রতারণার অভিযোগে লতিফ নামে একজনকে গ্রেফতার করি।

প্রতারক লতিফের দেওয়া তথ্য এবং তার স্বীকারোক্তি
মতে প্রতারণার মূল নায়ক এবং ডিআইজি পরিচয়ে প্রতারণাকারী কথিত মিজান ( প্রকৃত নাম উজ্জ্বল) কে
আলমডাঙ্গা থানাধীন ওসমানপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করি। প্রতারক উজ্জ্বল এবং লতিফের নিকট থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা মোবাইল ফোন, সিম, বিকাশ সংক্রান্ত নথিপত্র এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারক উজ্জ্বল এবং লতিফ কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে রাজমিস্ত্রী মামুনের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। প্রতারক উজ্জ্বল মামুন এবং লতিফের সহযোগিতায় লতিফের বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করে ডিআইজি মিজান সেজে প্রতারণা করে মুহিদুলের নিকট থেকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে চল্লিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

পুলিশের তড়িৎ পদক্ষেপে ভয়ংকর প্রতারক পুলিশের ডিআইজি পরিচয়দানকারী মিজান @ উজ্জ্বলসহ তার অন্যতম সহযোগী লতিফকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। অভিযুক্ত প্রতারক উজ্জ্বল, মামুন এবং লতিফের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এসব প্রতারকরা আপনার আশেপাশেই রয়েছে, তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করুন, তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশকে সহায়তা করুন। মনে রাখবেন, এসব অবৈধ পথে পুলিশে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করাও প্রতারণার শামিল। আপনিও ফেঁসে যেতে পারেন, যে কোন সময়। সুতরাং এখনই সতর্ক হোন।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন