ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মোঃ ইউনুস আলীঃ
মেহেরপুরে ফাল্গুন মাসের প্রথম থেকে আম গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিতে শুরু করে সোনালি রঙের মুকুল। প্রথম দিকে তেমন একটা পরিলক্ষিত না হলেও এখন পুরো জেলা জুড়ে মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে। কোথাও কোথাও তা গুটিতে পরিণত হয়েছে।
মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার প্রতিটা গ্রামেই বোম্বাই, ন্যাংড়া, তিলি বোম্বাই, ফজলি, আমরুপালী, মোহনভোগ, হিমসাগরসহ বিভিন্ন জাতের মুকুলে ছেয়ে গেছে আমবাগান। এতে ভালো ফলনের আশা করছেন মেহেরপুরের আম চাষিরা। তবে কিছু কিছু প্রজাতির আমগাছে মুকুল কিছুটা কম ধরেছে। সব মিলে ভালো ফলনের আশা করছেন আম চাষিরা।
গত বছরে গাছে প্রচুর পরিমাণ আম আসলেও বৃষ্টিপাত-ঝড় ও রাতের তাপমাত্রা বেশি থাকায় আশানুরূপ ফলন হয়নি। এবার শীতের শেষে বেশ কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় আমগাছের জন্য ভালো হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে এবং গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের আশা করছেন আম চাষিরা।
মেহেরপুর জেলার প্রতিটা গ্রামেই আম উৎপাদিত হয়। তবে বেশির ভাগ আমের আবাদ হয় মুজিবনগর উপজেলায়। আম চাষের জন্য উপযোগী বেলে, দোঁ-আঁশ মাটি হওয়ায় মেহেরপুর অঞ্চলে আম চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।
চাষিরা বলেন, এ অঞ্চলে ফাল্গুনের শেষ পর্যন্ত আমের মুকুল আসার সময়। তবে এবার ফাল্গুনের শুরুতেই কিছু কিছু আমগাছে মুকুল এসেছে।
গত বছরে আমের মুকুল এসেছিল প্রচুর পরিমাণ। তবে প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে চাষীরা বড় অঙ্কের লোকসান গুনেছিলেন। এবার প্রায় সব গাছে আশানুরূপ মুকুল এসেছে। কিছু কিছু গাছে গুটিও এসে গেছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় এবার ২ হাজার ৪’শ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে।এদিকে, মুকুল আসার শেষ মুহূর্তে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। গাছভর্তি মুকুলের সমারোহ। মুকুল যেন ঝরে না যায়, সে জন্য সেচ ও কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে। মুকুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছিও। এসব আম বাগানের পাশ দিয়ে হাঁটলে, মৌমাছির মৌ-মৌ গন্ধে মন ভরে যায়।
গত বছরের মতো এবারও প্রায় সব গাছে আশানুরূপ মুকুল এসেছে। তবে ন্যাংড়া জাতের আমগাছে মুকুল একটু বেশি এসেছে। যদিও গুটি আসা শুরু হয়নি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের ফলন বেশি হবে। একই এলাকার আম চাষি কথা বলে জানতে পারি যে পরিমাণ মুকুল দেখা যাচ্ছে, তাতে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এদিকে, মেহেরপুরের আম মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এবার এ জেলার আম ইউরোপে রপ্তানী হবে বলে জানা গেছে। ইতিপূর্বে সিংগাপুরের বাজারেও মেহেরপুরের আম পাওয়া গেছে।
চাপাইনবাবগঞ্জ আমের জন্য নামকরা হলেও মেহেরপুর জেলার আমের খ্যাতিও কম নয় সারাদেশে। গত বছরে এ জেলার আম ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বেকার-যুবকরা অনলাইলের মাধ্যমে আম বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন।