নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে গত বছরের ১৭মার্চ-২০২০ তারিখে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। বিগত দীর্ঘ সতরো মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে মেহেরপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আইসিটিতে দক্ষ শিক্ষকরা অনলাইনে জুম ও গুগল মিটে ক্লাস নিয়েছেন। তারা নিয়মিত ফেসবুকে লাইভ ক্লাসও নিয়েছেন। মেহেরপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া রোধে বাড়ী বাড়ী হোম ভিজিট করেছেন। মোবাইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর রেখেছেন। এখনও বাড়ী বাড়ী হোম ভিজিট চলছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকরা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সাহায্য করেছেন, সে খবরও শুনেছি। শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি দূরিকরণে রেডিও টেলিভিশনে এখনও প্রতিদিন ক্লাস হয়। শিক্ষকগণ প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে সংসদ টিভিতে প্রচারিত ক্লাসের ক্লাস রুটিন পৌছে দিচ্ছেন স্ব-যত্নে।
করোনাকালীন অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনে ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা বাড়ী থেকে মোবাইলের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছে। এখানেও শিক্ষকদের ভূমিকা রয়েছে। কারণ শিক্ষার্থীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে শিক্ষকরা মোবাইলে কিভাবে ক্লাস করতে হয় , প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হয় তা শিক্ষার্থীদের শিখিয়েছেন। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হলেও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে সপ্তাহে একদিন, দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে সপ্তাহে একদিন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হচ্ছে সপ্তাহে দুই দিন, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস সপ্তাহে ছয় দিন।আর প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কোন ক্লাস এ বছর রাখা হয় নাই। শিক্ষকগণকে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি দূরিকরণের বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে- Accelerated Remedial Learning Plan (ACL)। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্কুল চালানো শিক্ষকদের কাছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও মাস্ক নিশ্চিতকল্পে কাজ করে যাচ্ছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে শিখন ঘাটতি দূরিকরণে শিক্ষকরা সরকার ও শিক্ষাবিদদের সকল সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি এ বছর না থাকলেও শিক্ষকরা ধারাবাহিক মূল্যায়ন করেছেন। বাড়ী বাড়ী ওয়ার্কশিট পৌছে দেওয়া, ওয়ার্কশিট সংগ্রহ করে মূল্যায়ন করা, পড়াশুনায় উৎসাহ প্রদান ইত্যাদি কাজে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক কাজ করেছেন। প্রতিনিয়ত শিক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে অনলাইন মিটিং-এ শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেছেন। শিক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, করোনা পরবর্তী শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিতকল্পে ও ঝরে পড়া রোধে মেহেরপুরের শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। মেহেরপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একদিকে যেমন বিদ্যালয়ের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করেছেন। তেমনি শিক্ষার প্রকৃত মান উন্নয়নে ও সুশিক্ষিত জাতি গঠণে সরকারের একের পর এক ভালো পদক্ষেপে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সাহায্য করেছেন।
:
[লেখক ও শিক্ষকঃ মোঃ খালিদ মোশারফ, অনার্স (১ম শ্রেণি), মাস্টার্স (১ম শ্রেণি), আইইআর, ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়]