Home » মেহেরপুরে কনস্টেবল হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মেহেরপুরে কনস্টেবল হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কর্তৃক xVS2UqarHx07
117 ভিউজ

আজকের মেহেরপুর ডেস্ক:

মেহেরপুরের গাংনী থানার অন্তর্গত পিরতলা পুলিশ ক্যাম্পের কনেস্টেবল আলাউদ্দীন হত্যা মামলায় তাহাজুত হোসেন, আনিস মন্ডল, রুবেল হোসেন এবং শাকিল হোসেন নামের ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই), দুপুরের দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।

‌সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনিস মন্ডল কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়ার কালু মণ্ডলের ছেলে, তাহাজুত হোসেন আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে এবং শাকিল হোসেন ও রুবেল হোসেন সোনাউল্লাহ ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই গাংনী উপজেলার পিরতলা আইসি ক্যাম্পের এস আই সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বামুন্দী-কাজীপুর এলাকায় টহল থাকাকালীন সময়ে গোপন সূত্রে খবর পান মাইক্রোযোগ ঐ সড়ক দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার করা হবে।

এসময় পীরতলা সাহেবনগর নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে আটকানোর জন্য রাস্তার উপরে কাঠের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। এসময় মাইক্রোবাসটি কাছাকাছি এসে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছের গুড়ি পাশ কাটিয়ে মাইক্রোবাস চালক পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে এবং রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কনেস্টবল আলাউদ্দিন কে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে মাইক্রোবাসের বাম্পার এর উপরে আটকে যান।

এসময় মাইক্রোবাসটি পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে টেনে হেঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে গেলে হাড়াভাঙ্গা ডিএইচসিপি আর ফাজিল মাদ্রাসার সামনে স্পিড ব্রেকার এর নিকট কনস্টেবল আলাউদ্দিন ছিটকে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হলে সেখানে কনস্টেবল আলাউদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনাস্থল থেকে দুই বস্তায় মোট ৩৪০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয় এবং মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া থেকে কুষ্টিয়া-চ ০২-০০১১ নম্বরের মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়।

উক্ত ঘটনায় এসআই সুবীর রায় বাদী হয়ে গাংনী থানায় আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার সেশন মামলা নং১৩৪/২০১৬। জি আর কেস নং২২০/১৫। একই ঘটনায় ফেনসিডিল উদ্ধারে আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন সিদ্দিক এবং আতিউর রহমানকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্যে আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেন দোষী প্রমাণিত হলে তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি কাজী শহীদ এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল আলম খোকন ও কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।

এদিকে একই ঘটনায় ফেনসিডিল রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেনকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডদেশ দেওয়া হয়।
মেহেরপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় প্রদান করেন।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন