Home » গাংনী রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ

গাংনী রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ

কর্তৃক xVS2UqarHx07
70 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রােগী অপারেশনের সময় রােগীর পেটের মধ্যে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মেহেরপুরের গাংনী রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার দুপুরে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -২য় আমলী আদালত এর বিজ্ঞ বিচারক তারিক হাসান এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারী পেনাল কোডের ২৮৪, ২৮৭ ও ৪০৬ ধারায় রাজা ক্লিনিকের পরিচালক পারভিয়াস হোসেন রাজা, সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিজানুর রহমান ও এনেসথেসিয়া ডাঃ তাপস কুমারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে বিচারিক কার্যধারা এগিয়ে নিতে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গ্রহণের পূর্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেরপুর সার্কেলকে তদন্ত প্রতিবেদন ১৬/০২/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তরিকুল ইসলাম। উক্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর বিজ্ঞ আদালত অপরাধ আমলে নিয়ে ক্রিমিনাল মিস কেস নং- ০১/২০২২ হিসেবে নিবন্ধন করেন।

রবিবার ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজাসহ ডাঃ মিজানুর রহমান ও ডাঃ তাপস কুমার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত মামলার সার্বিক বিষয় বিবেচনায় আসামী ডাঃ মিজানুর রহমান ও ডাঃ তাপস কুমারকে জামিনে মুক্তি এবং ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজাকে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরের রাজা ক্লিনিকে বাচেনা খাতুন (৫০) নামে এক নারীকে গত ২০০২ সালের ২৫ মার্চ পিত্তথলিতে স্টোন জনিত সমস্যায় অপারেশন কর হয়। অপারেশনের পর পেটের মধ্যেই প্রায় পাঁচ ইঞ্চি লম্বা একটি সিজারিয়ান ইন্সট্রুমেন্ট “কাঁচি” রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর রাজশাহীতে গিয়ে ধরা পড়ে বিষয়টি। আবারও অপারেশন করে সেই কাঁচি বের করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

অন্যদিকে, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী নারীর নাম বাচেনা খাতুন (৫০)। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঢিৎলা ইউনিয়নের নওদা হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী। ভুক্তভোগী অসুস্থ বাচেনা খাতুন জানান, অপারেশনের পাঁচ থেকে ছয় মাস পর পেটে ব্যথা শুরু হলে তিনি রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন রাজার শরণাপন্ন হন। ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজার ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না দেখে বাচেনা খাতুন একটু ভালো থাকার আশায় কখনো চুয়াডাঙ্গা, কখনো আলমডাঙ্গা কখনো গ্রাম্য ডাক্তার এমনকি যখন যে যা বলেছে সেখানেই ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। আবারো পেটে অসহনীয় ব্যথা শুরু হলে গত ০২/০১/২০২২ ইং তারিখে রাজশাহীর দি ইউনাইটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। পরে ওই ক্লিনিকে এক্স-রে করে বাচেনা খাতুনের পেটের মধ্যে একটি কাঁচি রয়েছে দেখতে পান চিকিৎসক।

পরে চিকিৎসক রোগীর পোশাক পরিবর্তন করে একাধিকবার এক্স-রে করে পেটের মধ্যে কাঁচি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেই সাথে তাকে পুনরায় দ্রুত অপারেশন করে কাঁচি বের করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। পেটের মধ্যে কাঁচি রেখে সেলাইয়ের ঘটনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী পারভিয়াস হোসেন রাজা ভুক্তভোগী বাচেনা খাতুন এর সাথে যোগাযোগ করে ডাঃ পারভিয়াস হোসেন রাজা’র নিজ খরচে পুনরায় অপারেশন ও চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করেন।

ওই ঘটনায় পর রাজা ক্লিনিক এর স্বত্বাধিকারী ও চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন রাজা জানিয়েছিলেন,“মানুষ ভুলের উর্ধে নয়, মানুষের ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক”। তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দোষ এড়ানো যায়না। যদিও ডাঃ মিজানুর রহমান ভুক্তভোগী রোগী বাচেনা খাতুনের অপারেশনটি নিজ হাতে করেছিলেন এবং তিনি নিজে ও ডাঃ তাপস কুমার ওই সময় সহযোগী হিসেবে ছিলেন।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন