Home » মেহেরপুর চাষীদের মুখে হাসি চাষিরা ঝুঁকছে উচ্চ ফলনশীল এবার চাষ হচ্ছে ‘সাউ পেরিলা

মেহেরপুর চাষীদের মুখে হাসি চাষিরা ঝুঁকছে উচ্চ ফলনশীল এবার চাষ হচ্ছে ‘সাউ পেরিলা

কর্তৃক xVS2UqarHx07
585 ভিউজ

আমঝুপি অফিস:

মেহেরপুরের চাষিরা ঝুঁকছে উচ্চ ফলনশীল এবার চাষ হচ্ছে ‘সাউ পেরিলা’। এই ‘ পেরিলা’ উচ্চ ফলনশীল ও পুষ্টি-সমৃদ্ধ নতুন এক তৈলজাত ফসলের নাম। এই ফসল থেকে লিনোলিনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ তেল আহরণ ছাড়াও প্রাপ্ত খইল গবাদিপশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার ও জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়বলেন জানান আমঝুপি বিএডিসির তৈলবীজ খামারের উপ-পরিচালক আব্দুল আল মামুন বলেন এ জন্য পেরিলা চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মেহেরপুরের পরীক্ষামূলক চাষীদের মাঝে পেরিলা বীজ চুক্তিভিত্তিক চাষীদের চাষ করান জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন । আমঝুপি বিএডি সি – এর প্রসেসিং ও কন্টক গস্ট উপ পরিচালক জিয়াউর রহমান– তিনি বলেন লাভজনক হওয়ায় ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পেরিলা চাষ। এতে করে
বীজে ২৫ শতাংশের ওপরে আমিষ থাকায় তেল আহরণের পরে তা থেকে প্রাপ্ত খৈল গবাদিপশুর জন্য পুষ্টিকর খাবারসহ জৈব সার হিসেবেও ব্যাবহার করা যাবে। ৭০-৭৫ দিনের এই ফসল থেকে হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ ১.৫ টন পরিমান বীজ সংগ্রহ করা যাবে বলে দাবি জেলা কৃষি বিভাগের। কৃষি বিভাগের আশা বাণিজ্যিকভাবে চাষে যেমন তেলের আমদানির পরিমান কমে যাবে, তেমনি সাউ পেরিলা-১ দেশের অর্থনীতিতেও আনতে পারে আমূল পরিবর্তন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ১২ জানুয়ারি ফসলটি পেরিলা-১ (গোল্ডেন পেরিলা বিডি) জাত হিসেবে নামকরণ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অবমুক্ত করে। মেহেরপুরের জেলায় আমঝুপি কুঠিপাড়া মাঠে- পান্তা পাড়ার-বেলতলা পাড়া- বুড়িপোতা ইউনিয়নের কান্তপুর– পিরোজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর মাঠে-গাংনী উপজেলার তেরাইল বাটি মাঠে- পরীক্ষামূল মেহেরপুর জেলায় ১৫ জন চাষীকে এই চাষের উদ্বুদ্ধ করেছেন l
প্রথম চাষী আমঝুপি চাষী কিতাব আলী বলেন প্রথম এই চাষ করতে পেরে গর্বিত বলে মত প্রকাশ করেন। বেশকয়েকজন চাষি পেরিলা চাষের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন আরো বলেন বলেছেন- পেরিলা-১ বাণিজ্যিকভাবে চাষে যেমন তেলের আমদানির পরিমাণ কমে যাবে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও আনতে পারে আমূল পরিবর্তন। তিনি জানান- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এইচ এম এম তারিক হোসেন ২০০৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সংগ্রহ করেন এই জাত। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় বীজ বোর্ড সাউথ কোরিয়ান ভ্যারাইটির পেরিলা-১ নামে জাতটির নিবন্ধন দেয়। জাতটি দেশের আবহাওয়ার উপযোগী করে সাধারণভাবে সরিষা ভাঙানোর মতো করেই এই তেল পাওয়া যায়।

মেহেরপুর সদর উপজেলা আমঝুপি চাষী খায়রুল ইসলাম টুটুল বলেন গ্পেরিলা-চাষি নজরুল ইসলাম বলেন- এ ফসলটির আবাদ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আমঝুপি বিএডিসি ফার্মের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে ও বীজ সরবরাহ করে। প্রতি বিঘা জমিতে জমি প্রস্তুত থেকে ফসল মাড়াই পর্যন্ত খরচ হবে মাত্র ১০ হাজার টাকা। আর এ থেকে পাওয়া সম্ভব ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তা ছাড়া ৭৫ দিনে এ ফসল কাটা-মাড়াই সম্ভব।
উদ্যোগী চাষী বেলতলা পাড়া কাওসার আলী বলেন, পেরিলার গুণগত মান ও পতিত জমিতে চাষ করা সম্ভব। সেই সঙ্গে দো ফসলি ও তিন ফসলি ছাড়াও সাথি ফসল হিসেবে এর চাষ সম্ভব। তাই অনেকেই আসছেন পেরিলার চাষের পরামর্শ নিতে।

উপ-সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু তাহের জানান- সাথি ফসল হিসেবে চাষ করতে পারায় ৭০ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন চাষিরা। গাছ, পাতা, সবকিছুই কাজে লাগবে মানুষের। আশা করি ভবিষ্যতে ব্যাপক আকারে চাষ হবে এ অঞ্চলে।

গাংনী উপজেলার
উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মো.আশরাফুল ইসলাম বলেন
পেরিলা-১ চাষ সম্পর্কে চাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কোরিয়া থেকে আমদানি করা প্রতি লিটার ‘পেরিলা তেল’ বাংলাদেশের বাজারে ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি পুষ্টিগুণের কারণে ধনী শ্রেণির মধ্যে এই তেলের বিশেষ চাহিদা রয়েছে।

মেহেরপুর সদর কৃষি কর্মকর্তা মোছাম্মদ নাসরিন খাতুন বলেন- পেরিলা চাষাবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক কম মূল্যে পেরিলা তেল বাজারজাত করা সম্ভব হবে। মাটির গুণগত মান, আবহাওয়াও অনুকূলে আছে। আশা করি পেরিলা মেহেরপুরের কৃষিকে সমৃদ্ধ করবে এবং কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এইচ এম এম তারিক হোসেন ২০০৭ সালে থেকে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সংগ্রহকৃত জাতটি নিয়ে দেশে গবেষণা শুরু করেন। খরিপ-২ মৌসুমে অভিযোজিত এই ফসল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফসলটি থেকে আমরা লিনোলিনিক এসিড সমৃদ্ধ তেল আহরণ করতে পারব। যা সাধারণ তেলের চেয়ে বেশি উপকারি এবং বাজার মূল্যও বেশি। কৃষক নিজেই বীজ উৎপাদন করে সংরক্ষণ ও পরবর্তীতে চাষ করতে পারবেন। এছাড়াও তেল আহরণও করতে পারবেন স্বাভাবিকভাবে। এতে কৃষকরা বেশি উপকৃত হবেন।

০ মন্তব্য

You may also like

মতামত দিন